December 22, 2024, 9:01 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
দীর্ঘদিন কার্যক্রম ছিল না এমন ১৩৪ শুল্ক স্টেশন বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে সরকার। বর্তমানে দেশে ১৮৪টি শুল্ক স্টেশন আছে। এর মধ্যে ১৩৪টি শুল্ক স্টেশনকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন থেকে ৫০টি শুল্ক স্টেশন দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করতে হবে।
এনবিআর সূত্র জানায়, ২০০৭ সাল থেকেই আমদানি-রপ্তানি হয় না এমন ৫০টি শুল্ক স্টেশনকে অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে পূর্বানুমতি নিয়ে এসব শুল্কস্টেশন দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা যেত। কিন্তু গত দেড় যুগে ওই সব শুল্কস্টেশন দিয়ে কেউ আমদানি-রপ্তানি করেননি। ২০১২ সালেও এনবিআর অকার্যকর শুল্ক স্টেশনগুলো বন্ধের উদ্যোগ নেয়। তখন শতাধিক শুল্ক স্টেশন বাদ দেওয়ার সুপারিশ করে একটি প্রতিবেদনও জমা দেয় এনবিআরের গঠিত বিশেষ কমিটি।
চালু থাকা শুল্ক স্টেশনগুলোর মধ্যে রয়েছে যশোরের বেনাপোল; খুলনার রায়মঙ্গল ও খুলনা সদর; সাতক্ষীরার ভোমরা; চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ও দৌলতগঞ্জ; মেহেরপুরের মুজিবনগর; রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ, রাজশাহী সদর ও সিরাজগঞ্জ; চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ, রহনপুর ও আমনূরা রেলস্টেশন; নওগাঁর ধামইরহাট; দিনাজপুরের হিলি ও বিরল; পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা; নীলফামারীর চিলাহাটি; লালমনিরহাটের বুড়িমারী; কুড়িগ্রামের সোনাহাট, রৌমারী, চিলমারী ও নুনখাওয়া; মানিকগঞ্জের আরিচাঘাট; জামালপুরের ধানুয়া-কামালপুর; শেরপুরের নাকুগাঁও; ময়মনসিংহের গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী। এ ছাড়া আছে সুনামগঞ্জের বড়ছড়া, ছাতক, নোয়ারাই, চেলা ও ইছামতী; সিলেটের তামাবিল, ভোলাগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও শেওলা; মৌলভীবাজারের বেতুলী ও চাতলাপুর; হবিগঞ্জের বাল্লা; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও আখাউড়া; কুমিল্লার বিবিরবাজার; ফেনীর বিলোনিয়া; খাগড়াছড়ির রামগড়; রাঙামাটির তেগামুখ; কক্সবাজার সদর; টেকনাফ; নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ও মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর। এর পাশাপাশি প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সাতটি শুল্ক স্টেশন করা হয়েছে। এগুলো হলো পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র; রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র; মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র; এলপি গ্যাস আনার জন্য চট্টগ্রামের কুমিরার মেসার্স প্রিমিয়ার এলপি গ্যাস লিমিটেড, এলপিজি গ্যাস আমদানির জন্য সীতাকুণ্ডের বিএম এনার্জি লিমিটেড, জেএমআই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস লিমিটেড, ইউনিটেক্স এলপি গ্যাস লিমিটেডের জেটি।
কিছু ঐতিহাসিক বাণিজ্যপথ/
একসময় দেশের চাঁদপুর ও গোয়ালন্দে জমজমাট শুল্ক স্টেশন ছিল। কলকাতা থেকে মালবোঝাই বড় বড় নৌকা আসত এ দুটি জায়গায়। ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। কলকাতা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত একসময় ব্রডগেজ রেলপথ ছিল। পুরোনো শহর ফরিদপুরে শুল্ক স্টেশন ছিল। পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পর সেই পথও বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া কলকাতা থেকে একসময় মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিম ও লৌহজংয়ে বড় বড় স্টিমার ভিড়ত। এখানেও শুল্ক স্টেশন ছিল।
আবার ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত অতিক্রম করতে একাধিক হাঁটাপথ ছিল। যেমন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের নোয়াবদী থেকে হাঁটাপথে ভারতের ত্রিপুরার সিঙ্গারবিলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কুমিল্লার চিনাকান্দি সীমান্ত দিয়ে হাঁটাপথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ত্রিপুরা যাওয়া যেত। এসব পথে শুল্ক স্টেশন ছিল। এখন এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply